Read Aloud the Text Content
This audio was created by Woord's Text to Speech service by content creators from all around the world.
Text Content or SSML code:
আগে একটা সময় ছিলো যখন আমরা সিক্রেট সোসাইটির লক্ষ্য বা কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানতাম না। কিন্তু আজ আমরা তা জানি। নিজের চোখের সামনেই দেখছি কিভাবে তারা ক্রমাগত পৃথিবীকে কৃত্রিম করে তুলছে। মনে হতে পারে আমি টেকনোলজির অগ্রগতি চাই না বলে এই কথা বলছি। কিন্তু বুঝতে হবে টেকনোলজি কেবল একটি শব্দ নয়। এর সাথে মানব সভ্যতার সকল বিষয় জড়িত। তাই টেকনোলজির সুবিধা ভোগ করার সাথে সাথে আপনাকে এর প্রভাব সম্পর্কেও ভাবতে হবে। কথাগুলো খুব সাধারণ মনে হলেও টেকনোলজির প্রভাব এতটাই বেশি যে তা ক্রমাগত আমাদের আচার আচরণে, চিন্তাধারার আমুল পরিবর্তন নিয়ে আসছে।একবার চিন্তা করুন আমরা আমাদের জীবনে কতক্ষন ইন্টারনেট ব্যবহার না করে থাকতে পারবো। আমি নিজেকে এর থেকে আলাদা বলছি না। আমরা সবাই বর্তমানে এর দ্বারা তীব্রভাবে প্রভাবিত ও নির্ভরশীল। মানুষের জীবনকে আরও বেশি যান্ত্রিক করে তুলবে মেটাভার্স। খুব তাড়াতাড়ি মেটাভার্স আপনার জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠবে। আপনি চাইলেও এর থেকে দূরে থাকতে পারবেন না। স্পষ্টতই পৃথিবীর সকল কাজকর্ম মেটাভার্সে স্থানান্তরিত হবে। আপনি বর্তমানে এক দিনে ফেসবুক বা ইউটিউবে যতটা সময় থাকেন তার কয়েকগুণ বেশি সময় ধরে থাকবেন মেটাভার্সে। যারা ভিডিও গেম খেলেছেন তারা এই বিষয়টি ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। বহুল পরিচিত GTA Five গেমের কথাই ধরা যাক। ২০১৩ সালে প্রকাশিত একটি গেম! যদি GTA Five গেমটি NVIDIA Thirty সিরিজের কোনো গ্রাফিক্স কার্ড যুক্ত একটি পিসিতে খেলা যায় তবে নিঃসন্দেহে এটি প্রবলভাবে আপনার নজর কাড়তে সক্ষম হবে। গ্রাফিক্স কার্ডগুলো দিন দিন এত বেশি উন্নত হয়ে উঠেছে যে ভিডিও গেমগুলোর Environment একজন মানুষকে বাস্তবতার থেকেও বেশি আকৃষ্ট করে। এবার কল্পনা করুন একই গেমটি আপনি এমনভাবে খেলছেন যেখানে আপনার চারপাশের সবকিছুই বাস্তব মনে হচ্ছে। এমনকি আপনি আপনার হাত দিয়ে বাস্তবের মতোই সবকিছু ধরতে এবং অনুভব করতে পারছেন। আপনি সেখানে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর স্থানগুলো অনায়াসে ভ্রমন করতে পারছেন। সবচেয়ে সুন্দর বাড়ি, সুপার কারগুলোকে ব্যবহার করতে পারছেন আর এই সবকিছুকেই বাস্তবের মতো মনে হচ্ছে। এখন আপনি আমাকে বলুন এইরকম একটি পরিবেশ ছেড়ে আপনি কতক্ষন থাকতে পারবেন? চিন্তা করুন, ২০১৩ সালের সৃষ্ট একটি গেম থেকেই যদি এইরকম Feelinca পাওয়া যায় তবে ২০৩০ সালে তা কোথায় পৌঁছাবে। তাও যদি আবার মেটাভার্স ফেসবুকের মতো ফ্রি করে দেওয়া হয়। টেকনোলজি আজকে এত এগিয়ে গিয়েছে যে মানুষ আজ চাইলেই এমন একটি সুট তৈরি করতে পারবে যার ভিতরে থাকবে এমন সব সেন্সর তার ফলে একজনের কাছে সবকিছুই একদম বাস্তব বলে মনে হবে। ফলে মেটাভার্সের ভিতরে কোন একটি শীতল জায়গায় গেলে আপনার শীত লাগবে। আবার কোন মরূ এলাকায় গেলে গরম অনুভুতি হবে। বাস্তব জগতে যেখানে মানুষের যাতায়াতের জন্য এত অর্থ ও সময়ের প্রয়োজন হয় সেখানে তার কাছে যদি মেটাভার্সের এমন এক দুনিয়ার অপশন থাকে তবে সে নিঃসন্দেহে তা গ্রহণ করবে। আপনি যদি আপনার চারপাশে তাকান তবে খেয়াল করবেন বাস্তব জগতের সবকিছুকেই অনলাইনে কত্তিম করে তোলার প্রচেষ্টা চলছে। মানুষ যথাসাধ্য চেষ্টা করছে এগুলোকে Ultra Realistic করে তুলতে। সেখানে যদি তার কাছে একটি ThreeD জগৎ থাকে তবে সহজেই বলে দেওয়া যায় সে সবকিছুকেই সেই ThreeD জগতে নিয়ে যেতে চাইবে। ফলে Social media, Entertainment, Gaming, Working, Education, E-commerce ইত্যাদি সবকিছুই তখন মেটাভার্স নির্ভর হয়ে যাবে তখন আপনি না চাইলেও আপনাকে জোরপূর্বক মেটাভার্স ব্যবহার করতে হবে। অনেকেই এই ক্ষেত্রে জোর গলায় বলবে, যাই হয়ে যাক না কেনো আমি মেটাভার্স ব্যবহার করবো না। কিন্তু চিন্তা করে দেখুন, কোভিড-১৯ এর সময় আপনি না চাইতেও আপনাকে অনলাইনে পড়াশোনা, কাজকর্ম সবই করতে হয়েছে। অনেকেরই ভ্যাক্সিন দেওয়ার ইচ্ছা ছিল না। তবুও সকলকেই ভ্যাক্সিন নিতে হয়েছে। আমি এখানে ভ্যাক্সিন দেওয়ার ভালো-খারাপ দিক সম্পর্কে কিছু বলছি না। আমি বলছি বাধ্যতার কথা। ঠিক একই ভাবে আপনি পছন্দ করুন কিংবা না করুন, আপনার কাজের তাগিদে আপনাকে মেটাভার্সে রোগ দিতে হবে। অনেকেরই মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে, মেটাভার্সের HD quality - এর ThreeD world চালাতে তো অনেক হাই স্পিড ইন্টারনেটের প্রয়োজন হবে। যেখানে বাংলাদেশের অধিকাংশ জায়গায় HD quality - তে ভিডিও দেখতে গিয়েই চরম বাফারিং এর শিকার হতে হয় সেখানে মেটাভার্স কতটুকু কার্যকর হবে? মেটাভার্সকে পৃথিবীর যেকোনো স্থান থেকে কার্যকর করার পরিকল্পনাও সিক্রেট সোসাইটি সম্পন্ন করেছে। সিক্রেট সোসাইটি একদিকে মার্ক জুকারবার্গকে দিয়ে মেটাভার্স তৈরি করাচ্ছে এবং একই সময়ে ইলন মাস্ককে দিয়ে "স্টার লিংক" প্রকল্প বাস্তবায়ন করাচ্ছে। তথ্য অনুসারে, "স্টার লিংক" প্রকল্প শেষ হওয়ার পর ইন্টারনেটে ডাউনলোড স্পিড হবে 87.25 Mbps. ফলে মেটাভার্সকে বিশ্বব্যাপি পরিচালনা করতে কোন সমস্যাই হবে না। শোনা যাচ্ছে সকল টেক কম্পানি সম্মিলিত ভাবে মেটাভার্স তৈরি করবে। কিন্তু অনেক বিশেষজ্ঞই বলছেন যেখানে Microsoft, Apple, Google এর মতো প্রতিষ্ঠান একক ভাবেই এত শক্তিশালী সেখানে কেন তারা সাবলম্বী হওয়া শর্তেও Meta-র অধীনে কাজ করবে? বলা হচ্ছে মেটাভার্স কোন একক কম্পানির অধীনে থকবে না। বরং এটা অনেকটা বর্তমান সময়ের ইন্টারনেটের মতো কাজ করবে। অর্থাৎ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মেটাভার্সের মধ্যে তাদের নিজেদের মতো করে Environment তৈরি করবে। কিন্তু আপনি যেমন গুগলে কোন বিষয়ে ব্রাউজ করতে গেলে বিভিন্ন সাইটের কন্টেন্ট পান, ঠিক একই ভাবে মেটাভার্সেও একজন ব্যাক্তি একটি কম্পানির তৈরি করা এরিয়া থেকে অন্য কম্পানির তৈরি করা এরিয়াতে যেতে পারবে। এখন আসা যাক আসল প্রসঙ্গে, মেটাভার্স সামনে পৃথিবীতে একটি ব্যাপক বিস্তার করবে। কিন্তু একজন সাধারণ মানুষের জীবনে এটির প্রভাব ঠিক কতটুকু হবে? পূর্বে উল্লেখিত বিষয়গুলো বিবেচনা করলেই বুঝতে পারবেন একটা সময়ে গিয়ে মেটাভার্স আপনার সকল কাজেরই গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠবে। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। ভিডিও গেমগুলোতে আপনাকে যেমন নকল বাড়ি, গাড়ি, জায়গা কিনতে হয় তেযন মেটাভার্সেও কিনতে হবে যার পিছনে আছে সস্তা কিছু কোডিং আর Three D Model. এরমধ্যেই বেশ কিছু ডিজাইনার মেটাভার্সে বিক্রয় যোগ্য কৃত্রিম বাড়ির ডিজাইন করে চলেছে। কিন্তু এই কৃত্রিম বাড়িগুলো কিনতে আপনাকে ব্যবহার করতে হবে আসল টাকা। বর্তমান সময়ের সাধারন গেমগুলোতেই যেখানে মানুষ হিসাববিহীন ভাবে তাদের টাকা ঢেলে চলেছে সেখানে মেটাভার্স এর প্রসঙ্গ আসলে তারা কি করতে পারে তা আচ করাটা খুব একটা কঠিন কাজ নয়। মেটাভার্স দ্বারা সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হবে যুবক সম্প্রদায় এবং ধনী সমাজের ব্যাক্তি বর্গরা। ফলে সিক্রেট সোসাইটি আরো সহজে বাঁধাহীন ভাবে তাদের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাবে। যদি এককথায় বলতে বলেন তাহলে মেটাভার্স খুব তারাতাড়ি সোসাল মিডিয়ার জায়গা দখল করে নেবে। এখন আপনিই ভেবে দেখুন মেটাভার্সের সদস্য সংখ্যা কততে গিয়ে ঠেকবে। এখন একজন মুসলিম হিসেবে আপনার জন্য সমাধান কি হতে পারে। আমি আপনাকে বলতে পারবো না যে, কোন অবস্থাতেই মেটাভার্স ব্যবহার করবেন না। কারন বোঝাই যাচ্ছে ভবিষ্যতে আপনি তা ব্যবহার করতে বাধ্য হবেন। তাই আপনার জন্য একমাত্র উপায় হবে যতটা সময় পারা যায় ভার্চুয়াল দুনিয়া থেকে দূরে থাকা। যদি একবার আপনি এতে আসক্ত হয়ে পরেন, তবে এটগ থেকে বের হওয়া আপনার জন্য একটা বিশাল যুদ্ধের মতো হয়ে যাবে। বর্তমানে একজন মানুষ গেম, সোসাল মিডিয়া বা পর্ণগ্রাফিতে যতটা আসক্ত হয়ে পড়ে তার চেয়েও কয়েক গুণ বেশি প্রভাব পরবে মেটাভার্সের ক্ষেত্রে। কিন্তু এটি যত কঠিনই হোক না কেন হাল ছাড়া যাদে না, নিরাশ হওয়া যাবে না। কারণ মুসলিমরা কখনো হতাশ হয় না। আল্লাহর উপর ভরসা রেখে চেষ্টা করে যেতে হবে। সবশেষে একটা কথাই বলবো, "মুসলিমরা প্রস্তুত হও, ফিতনার নতুন ইউনিকর্ণ আসছে।"